আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল মান্নান সেন্টু-র ২৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী। চাঁপাই পোস্ট


বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল মান্নান সেন্টু ১৯৫১ সালের ৯ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বটতলাহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আব্দুল মান্নান সেন্টু যখন ছাত্র সে অবস্থায় শুরু হয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধের শুরুতেই মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তিনি স্বশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে সহ-যোদ্ধাদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সর্বত্র যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি গোমস্তাপুর ও রহনপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে আক্রমন পরিচালনা করেন এবং বিজয় লাভ না করা পর্যন্ত সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরের মতো যুদ্ধ চালিয়ে যান। 

আই.কম পরীক্ষার পরে তিনি বেশ কয়েকবার জেলে যান এবং রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে জেলে থেকেই বি.কম পাশ করেন। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত জি.এস (ছাত্রনেতা) হিসেবে তিনি দায়িত্বও পালন করেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে আব্দুল মান্নান সেন্টু ঐতিহ্যবাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার দুইবারের অন্যতম সফল চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁকে অনেকেই আধুনিক চাঁপাইবাবগঞ্জ পৌরসভার রুপকার বলে থাকেন। তাঁর সময়েই পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন ও প্রসার ঘটে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শীর্ষ পর্যায়ে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। একজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বহুদিন। ডায়াবেটিক সমিতি হাসপাতাল ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। পৌরপার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাহাঙ্গীর মুক্ত মঞ্চ এবং ‘বিডি হলের’ নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শহীদ ‘গোলাম নবী সাটুর’ নামে ‘শহীদসাটু হল’ করা, তাঁর অনন্য অবদানের স্বাক্ষ্য বহন করে। 
ব্যক্তিজীবনে আব্দুল মান্নান সেন্টু ছিলেন এক ছেলে, দুই মেয়ের জনক। তাঁর স্ত্রী নাম নাজমা আখতার। ‘কালো মানিক’ হিসেবে অসম্ভব জনপ্রিয়, বিশিষ্ট সমাজসেবী আব্দুল মান্নান সেন্টু ১৯৯৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর ২৬ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। 


এনএস/এএইচ
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post