১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ নবাবগঞ্জ'কে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি একক জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রশাসনকে জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ১৯৮২ সালে থানাগুলোকে উপজেলা এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তরিত করা শুরু করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই পদক্ষেপের কারণে নবাবগঞ্জের ৫টি থানা শিবগঞ্জ, নাচোল, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর ও নবাবগঞ্জ সদর থানা উপজেলায় উন্নীত হয় এবং নবাবগঞ্জ মহকুমা আত্মপ্রকাশ করে জেলা হিসেবে (১৯৮৪ সালের ১ মার্চ)
পরবর্তীতে নবাবগঞ্জের মানুষের দাবিতে ২০০১ সালের ১লা আগস্ট ‘নবাবগঞ্জ' নাম পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ করা হয়।
জেলাটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। কখনো নবাবগঞ্জ কখনও চাঁপাই নামে ডাকা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জকে।
প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন জাতে আম উৎপাদন হয় তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে ‘আমের দেশ' বা ‘আমের রাজধানী' ও বলা হয়।
ভারত উপমহাদেশ বিভাক্তের আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মালদহ জেলার একটি অংশ ছিল। যা ১৯৪৭ সালে মালদহ থেকে আলাদা হয়ে পূর্ব পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং রাজশাহী জেলার একটি মহাকুমা হিসেবে পরিগনিত হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামকরণ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামকরণ সম্পর্কে কয়েকটা বিষয় জানা যায়।
প্রাক-ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চলটি ছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের বিহারভূমি এবং এর অবস্থান ছিল বর্তমান সদর উপজেলার দাউদপুর মৌজায়। নবাবরা তাঁদের পাত্র-মিত্র ও পরিষদ নিয়ে এখানে শিকার করতে আসতেন বলে এ স্থানের নাম হয় নবাবগঞ্জ। নবাব আমলে মহেশপুর গ্রামে চম্পাবতী মতান্তরে ‘চম্পারানী বা চম্পাবাঈ’ নামে এক সুন্দরী বাঈজী বাস করতেন। তার নৃত্যের খ্যাতি আশেপাশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি নবাবের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন। তার নামানুসারে এই জায়গার নাম ‘চাঁপাই'।
আরেক মতে অত্র অঞ্চলে রাজা লখিন্দরের বাসভূমি ছিল। লখিন্দরের রাজধানীর নাম ছিল চম্পক। চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই।
ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর (১৮৮৫-১৯৬৯ খ্রি) বাঙলা সাহিত্যের কথা গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে বর্ণিত লাউসেনের শত্রুরা জামুতিনগর দিয়ে গৌড়ে প্রবেশ করে। বর্তমান ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া পূর্বে জামুতিনগর নামে পরিচিত ছিল।
কোনো কোনো গবেষক এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মত দিয়েছেন যে, চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই নামের উৎপত্তি হয়েছে। অর্থাৎ বেহুলার শ্বশুরবাড়ি হিসেবে চাঁপাইকে চম্পকনগর বলেছেন।